জমি লিখে না দেওয়ায় দিনাজপুর সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের রানীপুর গ্রামে ছেলেদের বিরুদ্ধে বাবাকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তির নাম মোখলেছুর রহমান (৫০)। আজ বুধবার বিকেলে ঘরবন্দী থাকা ওই ব্যক্তিকে ছেলেদের নির্যাতনের হাত থেকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানায় পুলিশি হেফাজতে দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বজলুর রশিদ বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে এলাকার কয়েকজন যুবক ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় থানায় নিয়ে আসেন। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। ডান পায়ের গোড়ালির ওপরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন আছে। পরে তাঁকে এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে মোখলেছুর রহমানের দুই ছেলে নাহিদ হাসান (২৬) ও জাহিদ হাসান (১৯) তাঁদের দুই চাচার সঙ্গে যোগসাজশে প্রায় ৮০ লাখ টাকার সম্পত্তি লিখে নেওয়ার জন্য বাবা মোখলেছুরকে চাপ দিতে থাকেন। মোখলেছুর ছেলেদের কথায় কর্ণপাত না করায় এক মাস ধরে ছেলেরা তাঁকে ঘরে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে আসছিলেন।
নির্যাতনের শিকার মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করেন, মার্কেট ও জমি সন্তানদের নামে লিখে না দেওয়ায় এক মাস ঘরে বন্দী করে অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে। আঙুলের নখ তুলে নিয়েছে। পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিয়ে কেটে দিয়েছে। তারা গলায় দড়ি দিয়েও মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে।
মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমার দুই ছেলে তাদের বড় চাচা মমিনুল ইসলাম ও মেজ চাচা মাহবুব এবং আমার ভাতিজা মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই কাজগুলো করছে। আজকে মারধর করার সময় এলাকার কয়েকজন আমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আমি আমার ছেলেদের বিচার দাবি করি।’
মোখলেছুর রহমানকে উদ্ধারে এগিয়ে আসা প্রতিবেশী আবেদ আলী মানিক বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এই নির্যাতন চলে আসছিল। আজকেও নির্যাতন করার সময় এলাকার বেশ কয়েকজন এগিয়ে যান। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ইট দিয়ে ঢিল মারতে শুরু করে। তারপরও ওই ব্যক্তিকে সবাই মিলে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোখলেছুর রহমানের দুই ছেলে ও দুই ভাইয়ের (মমিনুল ইসলাম ও মাহবুব) সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বজলুর রশিদ বলেন, ওই ব্যক্তিকে থানায় লিখিত অভিযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য অবশ্যই দোষী ব্যক্তিদের চরম শাস্তির আওতায় আনা হবে। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[ad_2]
Source link