কোনো শক্তি কাজে লাগছে না, করোনাভাইরাসই যেন সবচেয়ে শক্তিশালী: প্রধানমন্ত্রী

[ad_1]

জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা, ১০ জুন। ছবি: পিআইডিসংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ মরণশীল। মারা যাওয়াটাই বাস্তব। করোনা পরিস্থিতিতে এমন একটা সময় বিশ্ব পার করছে যে এখানে কোনো শক্তি কাজে লাগছে না। যে যতই শক্তিশালী হোক, যতই অর্থশালী, অস্ত্রশালী হোক, কোনো শক্তিই কাজে আসছে না। করোনাভাইরাসই যেন সবচেয়ে শক্তিশালী। মনে হয় যেন প্রকৃতি প্রতিশোধ নিচ্ছে।


আজ বুধবার জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা পরিস্থিতিতে আজ থেকে সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। কাল ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী।


করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সবকিছু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা একদিকে যেমন করোনা মোকাবিলা করব, পাশাপাশি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন যাতে চলতে পারে, মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য করণীয় সব করব।’


প্রথম দিন সাংসদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনা হয় এবং এর ওপর আলোচনা হয়। পরে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং মারা যাওয়া ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।


কাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেন স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী।


করোনা পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে না এসে বাসা থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হতে পারেন কি না, সেই প্রস্তাব দেন সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান। তিনি হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক এবং মাথাও ঢেকে সংসদে আসেন। প্রথমে নিজে মাস্ক খুলে কথা বলতে চাইলে স্পিকার অনুমতি দেননি। এরপর মাস্ক পরেই বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী না থাকলে কে চালাবে দেশটা? তাই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা ভেবে বাসায় থেকে যুক্ত হলে ভালো হয়।’


প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণের সময় এর জবাব দিতে গিয়ে বলেন, তিনি নিজের জীবন নিয়ে চিন্তা করেন না। তিনি বলেন, ‘জন্ম যখন হয়েছে, মৃত্যু হবেই। গুলি খেয়ে মরি, বোমা খেয়ে মরি কিংবা করোনাভাইরাসে অসুস্থ হয়ে মরি অথবা এখন কথা বলতে বলতে অসুস্থ হয়ে মরে যেত পারি। মৃত্যু যখন অবধারিত, তখন মৃত্যুকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মৃত্যুকে কখনো ভয় পাইনি, পাবও না। আল্লাহ জীবন দিয়েছেন। একদিন সেই জীবন নিয়েও যাবেন। মানুষকে কিছু দায়িত্ব, কিছু কাজ দিয়ে পাঠিয়েছে আল্লাহ। সেই কাজটুকু করতে হবে। আল্লাহর লিখিত যে দায়িত্ব আমার ওপর অর্পিত হয়েছে, যতক্ষণ এই কাজটুকু শেষ না হবে, ততক্ষণ কাজ করে যাব। কাজ শেষে আমিও চলে যাব। এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আমি এখানে বেঁচে থাকার জন্য আসিনি। জীবনটা বাংলার মানুষরে জন্য বলিয়ে দিত এসেছি। সুতরাং, ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’


করোনাকালে সাংসদ, দলের নিবেদিত প্রাণ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে আক্ষেপ ঝরে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস আজ এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে যে যেসব ব্যক্তি মারা গেছেন তাঁদের দেখতে যেতে পারিনি। তাঁদের পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে যাব, সেই সুযোগটাও নেই।’


১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর যাঁদের সব সময় কাছে পেয়েছেন তাঁদের অন্যতম হাবিবুর রহমান মোল্লা বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি সাংসদ মমতাজ বেগমের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেওয়ার স্মৃতিচারণা করেন। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আনিসুজ্জামান তাঁর শিক্ষক। এ জন্য তিনি সব সময় শিক্ষকদের মর্যাদা দিতেন। চিকিৎসার সব ধরনের চেষ্টা করেছেন। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী পদ্মা সেতুর প্রতিটি টুকিটাকি নিজ থেকে খোঁজ রাখতেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।


করোনার সময় প্রশাসন, পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী, আনসার-ভিডিপি, চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করছেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাংবাদিকসহ প্রত্যেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে প্রশাসন ও রাজনৈতিক কর্মীসহ সবার ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ২৪ লাখ মানুষ ও অনেক গবাদিপশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


করোনাকালে অভাবী মানুষকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা মানুষও যাতে না খেয়ে মারা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের কাছে তহবিল দেওয়া আছে। এর বাইরে বিত্তবান, দলীয় নেতা-কর্মীরাও সাহায্য করছে। তিনি বলেন, বেছে বেছে সব পেশার মানুষকে সহায়তা করা হয়েছে। রিকশার পেছনে চিত্রাঙ্কন করেন যে শিল্পীরা, তাঁদের খুঁজে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এটা তাঁর বোন শেখ রেহানার মাথা থেকে এসেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।


শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় আরও অংশ নেন মতিয়া চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের সাংসদ আ স ম ফিরোজ।


অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী সবাইকে স্বাগত জানান। করোনাকালের বিশেষ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মাস্ক, গ্লাভস পরে দূরত্ব বজায় রেখে সংসদ অধিবেশন চলবে। গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সাংসদেরা বাজেট অধিবেশনকে কার্যকর ও সক্রিয় করে তুলবেন।


করোনাভাইরাসের কারণে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করেছে সংসদ সচিবালয়। বাজেট–সংক্রান্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্যদের যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দর্শনার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রবেশ নিষিদ্ধ। সাংসদদের সবাই একসঙ্গে অধিবেশনে আসতে পারছেন না। ভাগ করে তাঁদের আসার ক্রম ঠিক করা হয়েছে। এক আসন থেকে অন্য আসনের দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্যই এমনটা করা হয়েছে। ৮০ থেকে ৯০ জনের বেশি সাংসদ উপস্থিত থাকছেন না। প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে বেশ কিছু আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে।


প্রথম দিনের অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলী নির্বাচিত করার পরই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তিনটি অধ্যাদেশ উপস্থাপন করেন। অধ্যাদেশগুলো হচ্ছে—আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২০ ও আয়কর সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২০।



[ad_2]

Source link
IRFAN H

Hi, This is IrfanH I love to travel and passing by gossip with friends.

1 Comments

Please do not enter any spam link in the comment box

  1. It is in reality a great and helpful piece of information. I'm satisfied that you shared this useful
    information with us. Please stay us up to date
    like this. Thanks for sharing.

    ReplyDelete
Previous Post Next Post
);