অপরাজিত ২৪৬ করেও ‘স্বার্থপর’ অপবাদ গায়ে মেখে পরের টেস্টে বাদ!

[ad_1]

জিওফ বয়কট: অপরাজিত দ্বিশতক করেও ‘স্বার্থপর’ ব্যাটিংয়ের জন্য পরের টেস্টে বাদ। ছবি: সংগৃহীতএকটা জায়গায় জিওফ বয়কট একেবারেই আলাদা। ঠোঁটকাটা স্বভাবের কথা বলা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে বয়কটের যথেষ্টই সুনাম থাকার পরও মনের কথা অকপটে বলে ফেলার ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গীসাথি আছে। তাৎক্ষণিকভাবে মনে পড়ছে ইয়ান চ্যাপেলের কথা। চ্যাপেলদের বড় ভাই কোনো কিছু নিয়ে সমালোচনা করলে তাতে লবণ ও মরিচ দুটোই মিশে থাকে।


জি‌ওফ বয়কটের যে অনন্য তার কথা বলা হচ্ছে, সেটি ক্রিকেটীয়ই। ক্রিকেট ইতিহাসে বয়কটই একমাত্র ব্যাটসম্যান, টেস্টে নিজের সর্বোচ্চ স্কোরের কথা উঠলে যাঁর মন খারাপ হয়ে যায়। সেই সর্বোচ্চ স্কোর অপরাজিত ২৪৬। টেস্ট ক্রিকেটে যেটি তাঁর একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরিও। মন খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণ, এই ইনিংস খেলার পর তিনি পরের টেস্ট থেকে বাদ পড়েন।


ডাবল সেঞ্চুরি করার পরও পরের টেস্ট থেকে বাদ পড়া ব্যক্তি বয়কট একা নন। ভারতের করুন নায়ার তো অপরাজিত ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও পরের টেস্ট থেকে বাদ পড়েছেন। সেই ট্রিপল সেঞ্চুরিও মাত্র তৃতীয় টেস্টেই। জীবনের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিকে ট্রিপলে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রেও করুন নায়ার ছিলেন তৃতীয় (বাকি দুজন ববি সিম্পসন ও স্যার গ্যারি সোবার্স)।


এমন ক্রিকেটারও আছেন, অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি করার পরও যিনি শুধু পরের টেস্ট থেকেই বাদ পড়েননি, সেটিই হয়ে গেছে তাঁর জীবনের শেষ টেস্ট ম্যাচ। জ্যাসন গিলেস্পির সেই ডাবল সেঞ্চুরি বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাটিং করতে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করে ফেলার পর সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছিলেন সম্ভবত তিনি নিজেই। অস্ট্রেলিয়ার পরের টেস্টে গিলেস্পির বাদ পড়ায় এই ডাবল সেঞ্চুরি কোনো ঢালই হতে পারেনি। তাঁকে তো আর ব্যাটিংয়ের জন্য দলে নেওয়া হয়নি। গিলেস্পি অবশ্য বলতেই পারেন, যে জন্য নেওয়া হয়েছিল, সেই বোলিংয়েই আমাকে ব্যর্থ বলেন কীভাবে? স্পিন অধ্যুষিত সেই টেস্টে অস্ট্রেলিয়া খেলতে নেমেছিল মাত্র দুজন ফাস্ট বোলার নিয়ে। দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০ ওভার বোলিং করে ব্রেট লির মাত্র একটি উইকেট। যেখানে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫ ওভার বোলিং করেই বাংলাদেশের প্রথম তিনটি উইকেট নিয়েছেন গিলেস্পি, দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংই পেয়েছেন মাত্র ৪ ওভার।


করুন নায়ারের বাদ পড়াটা বিরাট কোহলি প্রবর্তিত ভারতের নতুন দলীয় সংস্কৃতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নায়ার সুযোগ পেয়েছিলেন অজিঙ্কা রাহানের ইনজুরির কারণে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের পরের টেস্টের আগে কোহলি ঘোষণা করলেন, দুই বছর ধরে রাহানে ধারাবাহিকভাবে দলকে যা দিয়ে গেছেন, তাতে নিজের দোষ নেই, এমন একটা কারণে দলে তাঁর জায়গা কেড়ে নেওয়াটা অন্যায় হবে। অজিঙ্কা রাহানে তাই দলে ফিরলেন, ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও বাইরে বসে থাকলেন করুন নায়ার। ৮২ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলে রাহানে অধিনায়কের মুখও রাখলেন।


অপরাজিত ২৪৬ রান করেও জিওফ বয়কটের বাদ পড়ায় এমন ভিন্নতর কোনো বিবেচনা ছিল না। এমন একটি ইনিংস খেলার পরও বাদ পড়েছেন বলেই তো বিস্ময়। সেই বিস্ময় আরও বাড়বে, যখন বলা হবে, এমন একটা ইনিংস খেলার কারণেই আসলে বাদ পড়েছিলেন বয়কট। তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল ‘মাত্রাতিরিক্ত ধীরগতি’র ব্যাটিং করায়। কারণ হিসাবে এটি বললে তাও একটা ভদ্রতার আবরণ থাকত। ইংলিশ সিলেকশন কমিটির চেয়ারম্যান ডগ ইনসোল আনুষ্ঠানিকভাবেই জানিয়ে দেন, জিওফ বয়কটকে বাদ দেওয়া হয়েছে স্বার্থপর ব্যাটিংয়ের কারণে।


ডেইলি মিরর পত্রিকায় জিওফ বয়কটকে বাদ দেওয়ার দাবি। ছবি: সংগৃহীত


জিওফ বয়কটের ওই মহা বিতর্কিত ইনিংস ১৯৬৭ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে। সেটিও আবার বয়কটের হোমগ্রাউন্ড লিডসের হেডিংলিতে। নিয়মকে প্রমাণ করা দু'একটা ব্যতিক্রম বাদ দিলে দ্রুত রান করার ‘দুর্নাম’ জিওফ বয়কটের কখনোই ছিল না। অখণ্ড মনঃসংযোগ আর দুর্দান্ত টেকনিকে ভর করে রানের দিকে না তাকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাটিং করে যাওয়াটাই ছিল তাঁর ট্রেডমার্ক। যে কারণে মনে একটা প্রশ্ন জাগতে বাধ্য, এই ইনিংসে বয়কট এমন কী করেছিলেন যে, এমন বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন নির্বাচকেরা?


পুরো ইনিংসের পরিসংখ্যান থেকে এর উত্তর পাওয়া কঠিন। ৫৭৩ মিনিটে ৫৫৫ বল খেলে বয়কটের ওই অপরাজিত ২৪৬। চার মেরেছেন ৩০টি, ছয় ১টি। স্ট্রাইক রেট ৪৪.৩২। এখনো একেবারে আঁতকে ওঠার মতো কিছু নয়। সেই সময়ের বিচারে তো আরও না। এটি পুরো ইনিংসের হিসাব। ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন কত বলে, তা কোথাও খুঁজে পেলাম না। তবে রেকর্ড ঘেঁটে বলের হিসাবে টেস্টে সবচেয়ে ধীরগতির ১৪টি ডাবল সেঞ্চুরির যে তালিকাটি পাচ্ছি, তাতে বয়কটের নাম নেই। তাহলে এই ইনিংস নিয়ে এত হইচই হয়েছিল কেন? এমনও নয় যে, বয়কটের এই ইনিংসের কারণে ইংল্যান্ড জয়বঞ্চিত হয়েছে। ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে ৫৫০ রান করে প্রথম ইনিংস ডিক্লেয়ার করার পর ভারত অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৬৪ রানে। ফলো অন করতে নেমে মনসুর আলী খান পাতৌদির ১৪৮ রানের দারুণ এক ইনিংসের কল্যাণে ভারত ৫১০ রান করে ফেললেও ইংল্যান্ড হেসেখেলে ৬ উইকেটে জিতে যায়। সেটিও পঞ্চম দিনে ৪৭.৩ ওভারেই। তাহলে বয়কটের ওপর এমন খড়্গ নেমে এসেছিল কেন?


এই প্রশ্নের উত্তর পেতে টেস্টের প্রথম দিনে ফিরে যেতে হবে। টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দিন শেষে ইংল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ২৮১। সেই সময়ের বিচারে অনেক ভালো। তবে নির্বাচকদের চোখে সেটি বয়কটের কারণে হয়নি, সেটি হয়েছে বয়কট থাকা সত্ত্বেও। সারা দিন ব্যাটিং করে বয়কট অপরাজিত ১০৬ রানে। সেশন ধরে ধরে হিসাব করলে আরও পরিষ্কার হবে চিত্রটা। লাঞ্চ পর্যন্ত প্রথম সেশনে বয়কট করেছেন ২৫ রান। মাঝখানে একটা সময় ৪৫ মিনিট কোনো রান করতে পারেননি। দ্বিতীয় ঘণ্টায় রান তাই ৮। লাঞ্চ থেকে টি পর্যন্ত সময়ে বয়কটের বিচারে রীতিমতো ‘ঝোড়ো ব্যাটিং’ করে ৫০ রান, শেষ সেশনে করেছেন ৩১।


বয়কটের ব্যাটিংয়ের ধরন জেনেও ব্রিটিশ প্রেস কেন সম্মিলিতভাবে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তা একটা রহস্য বটে। পরের দিন ইংল্যান্ডের সব পত্রিকায় একযোগে বয়কটের মুণ্ডুপাত করা হলো। একেক পত্রিকার একেক ভাষা। তবে সুরটা সর্বজনীন। বয়কট যে ব্যাটিং করেছেন, সেটি মাঠ থেকে দর্শক তাড়ানোর ব্যাটিং। পরদিন চার ঘণ্টারও কম সময়ে ১৪০ রান করে ফেলায় সেই সমালোচনার কোনো ভূমিকা নেই বলে বরাবরই দাবি করে এসেছেন বয়কট, তবে সর্বনাশ যা হওয়ার তা প্রথম দিনেই হয়ে গেছে। নির্বাচকদের করণীয়টাও বলে দিয়েছে ‘ডেইলি মিরর’ পত্রিকা। ‘স্লিং বয়কট আউট!’ শিরোনাম যেন চিৎকার করছে পত্রিকার পাতায়। এর ওপরে ছোট টাইপে যা লেখা, সেটির মর্মার্থ: হামাগুড়ি দেওয়া এই ব্যাটিংয়ের পর বয়কটকেও ব্যারিংটনের মতো শাস্তি দেওয়া উচিত।


অপরাজিত ২৪৬ রানের সেই ইনিংস খেলার সময় জিওফ বয়কট। ছবি: সংগৃহীত


তা এখানে ব্যারিংটন আসছেন কোত্থেকে? আসছেনই না, প্রবলভাবে আসছেন। ডাবল সেঞ্চুরি করার পরও বয়কটের বাদ পড়ায় প্রচ্ছন্ন ভূমিকা আছে তাঁর ইংল্যান্ড টিমমেট কেন ব্যারিংটনেরও। দুই বছর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এজবাস্টনে সেঞ্চুরি করার পরও পরের টেস্টে ব্যারিংটনকে বাদ দিয়েছিল ডগ ইনসোলের এই নির্বাচক কমিটিই। অপরাধ একই রকম। ১৩৭ রান করতে ব্যারিংটন ৪৩৫ মিনিট লাগিয়ে ফেলেছিলেন। মজার ব্যাপার হলো, সেই টেস্টেও ইংল্যান্ড অনেক সময় বাকি থাকতেই ৯ উইকেটে জিতেছিল। ব্যারিংটনের জন্য এক বিচার, আর বয়কটের জন্য আরেক—এটা তো আর হতে পারে না। লর্ডসে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে তাই বাদ দেওয়া হলো বয়কটকে। ব্যারিংটনের সময় যেটি সরাসরি বলা হয়নি, সেটিও এখানে আর গোপন থাকল না। ‘স্বার্থপরতা’র সিল লাগিয়ে দেওয়া হলো বয়কটের গায়ে। যে দাগ তাঁকে বাকি ক্যারিয়ারজুড়ে বহন করতে হয়েছে বলে এখনো দুঃখ হয় বয়কটের। দুঃখের চেয়েও বেশি হয় রাগ। সিলেকশন মিটিংয়ে থাকলেও তাঁকে বাদ দেওয়ায় সেই সিরিজে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ব্রায়ান ক্লোজের কোনো ভূমিকা ছিল না জানার পর তাঁর ওপর রাগটা কমেছে। তবে ডগ ইনসোলকে এখনো ক্ষমা করতে পারেননি। বিবিসির টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে কমেন্ট্রি করার সময় সহ-ধারাভাষ্যকার কখনো কখনো খোঁচা দিয়েছেন এ নিয়ে। রাগে গড়গড় করতে করতে বয়কট বলেছেন, Insole-এর নামটা ‘I’-এর বদলে ‘A’ দিয়ে লেখা উচিত।


বয়কট নিজে তাঁর ব্যাটিংয়ে কোনো সমস্যা খুঁজে পাননি। বরং প্রথম দিনের পুরোটা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিতে পেরে তৃপ্তিই বোধ করেছিলেন। সেটির অবশ্য কারণও ছিল। ওই টেস্টের আগে তাঁর ফর্ম ছিল খুবই খারাপ। ৯টি ফার্স্ট ক্লাস ইনিংসে করেছেন মাত্র ১২৪ রান, কাউন্টি ক্রিকেটে একমাত্র ‘পেয়ার’টিও ওই সময়ে। লিডস টেস্টে তাই তাঁর দলে জায়গা পাওয়া নিয়েই সংশয় ছিল। ওই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে টেস্টে প্রায় আড়াই শ রান করা শুধু স্কিল নয়, প্রচণ্ড মানসিক শক্তিরও প্রমাণ। ব্রায়ান ক্লোজও পরে এই কথাটাই বলেছিলেন, ‘অন্য সময় হলে জেদ আর দৃঢ়প্রতিজ্ঞার একটা উদাহরণ হতো এই ইনিংস। কিন্তু টেস্টের প্রথম দিন বলেই সেটি সবার অমন চোখে লেগেছে।’কেন ব্যারিংটন: বয়কটের মতো অভিজ্ঞতা আগেই হয়েছিল তাঁর। ছবি:সংগৃহীতটেস্টের প্রথম দিন বলে সমস্যা হবে কেন, সেটা অবশ্য বোঝা কঠিন। টেস্টের প্রথম দিন তো জয়ের পথযাত্রার বাকি চার দিনের ভিত্তি গড়ার দিন। ধীরগতির ব্যাটিং তো সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিপক্ষকে কোনো টার্গেট সেট করতে দেওয়ার সময়, বা নিজেরা রান তাড়া করার সময়। ও হ্যাঁ, ফিল্ডিংয়ের সময় অ্যাংকেলে চোট পাওয়ায় ওই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংই করেননি বয়কট। তাঁর বদলে ওপেন করেন প্রথম ইনিংসে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করা কেন ব্যারিংটন। বয়কটের বাদ পড়ায় তাঁর যে প্রচ্ছন্ন ভূমিকা ছিল, সেটি তো বলেছিই। প্রত্যক্ষ ভূমিকাও যে একেবারেই ছিল না, তা নয়। এমনিতে ব্যাটিং করার ধরনে ব্যারিংটনকে বলতে পারেন বয়কটের ছোট ভাই। স্টোনওয়ালার হিসেবেই যিনি বেশি বিখ্যাত। প্রথম ইনিংসে বয়কটের সঙ্গে ১৩৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সেই ব্যারিংটনের অবদান ৯৩। বয়কটকে আরও বিরক্তিকর করে তোলায় যা কিছুটা হলেও ভূমিকা রেখেছে। বয়কটের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে যাওয়ায় সেঞ্চুরি পাননি, তবে দ্বিতীয় ইনিংসেও ৪৬ রান করে ব্যারিংটনই সে টেস্টে ম্যান অব দ্য ম্যাচ। সেঞ্চুরি করেও ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে বাদ পড়াতেই শুধু এই দুই ইংলিশ গ্রেটের মিল শেষ নয়, চাইলে আরেকটি কাকতালীয় যোগসূত্রও খুঁজে পাওয়া যায় দুজনের মধ্যে। ১৯৬৭ সালের যে দিনে বয়কটের ওই অপরাজিত ২৪৬ রান, ১২ বছর আগে ঠিক সেই দিনেই টেস্ট অভিষেক হয়েছিল কেন ব্যারিংটনের। ইংল্যান্ডের পক্ষে এখনো তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড়ের (৫৮.৬৭) মালিকের টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল শূন্য রানে আউট হয়ে।


বাদ পড়ার পর বয়কট কী করেছিলেন, সেটি না বললে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। চ্যাম্পিয়নরা যেভাবে জবাব দেয়, বয়কটও সেভাবেই দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ড যখন লর্ডসে ভারতের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচ খেলছে, কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে রানবন্যা বইয়ে দেন। চার ইনিংসে করেন ৫৮৪ রান। আউট মাত্র একবার। এজবাস্টনে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে আবারও ফেরেন ইংল্যান্ড দলে। তবে সেই ফেরাটা সুখকর হয়নি। হয়তো ওই অপবাদ দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করছিল বলেই। নিজের মানসিক অবস্থাটা বোঝাতে বয়কট পরে বলেছেন, ‘যদি একটি মেডেন ওভার দিয়ে দিই, এই ভয়েই আমি তটস্থ ছিলাম। মনে হচ্ছিল, পুরো প্রেসবক্স আমার একটি ডিফেন্সিভ শট খেলার অপেক্ষায় ওত পেতে আছে।’ প্রথম ইনিংসে ২৫ রান করার পর বিষেন সিং বেদীকে ডাউন দ্য উইকেট মারতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে যাওয়ার কারণটা তাই অনুমান করাই যায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ রান করার পরই বোল্ড হয়ে যান ভেংকটারামন সুব্রামানিয়ার বলে। যাঁর বলের গতি নিয়ে পরে বয়কট রসিকতা করেছেন, ‘ফালতু এক মিডিয়াম পেসার, বোলার হিসেবে যে কিনা প্রায় আমার মতোই দুর্দান্ত।’


১০৮ টেস্টে ৮১১৪ রান করেছেন। সেঞ্চুরি ২২টি। মাঝখানে তিন বছরের জন্য স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে না গেলে টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দশ হাজার রান করার কীর্তিটাও তাঁরই হতো। জিওফ বয়কটের সঙ্গে দেখা হলে এসব নিয়ে কথা বলতে পারেন। তবে ভুলেও টেস্টে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংসের কথা তুলবেন না। বদমেজাজি হিসেবে কিন্তু জিওফ বয়কটের বিশেষ 'সুনাম' আছে!



[ad_2]

Source link
IRFAN H

Hi, This is IrfanH I love to travel and passing by gossip with friends.

Post a Comment

Please do not enter any spam link in the comment box

Previous Post Next Post